প্রদীপ্ত দেলোয়ার ডেক্স
৫/১২/২০২০ ১২:১৮:০০ AM
0
সেদিন ১২ মে ১৯৭১ সাল।
সাধারণ অন্যসব দিনের মতই সাধারণ প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে দিনের শুরু হলেও জনমানুষের মনে কাজ করছিলো এক আতঙ্ক। কারণ পাক হানাদার বাহিনীর ভয়াল ছোবল তখন পাবনা শহরে ও তার আশে পাশে শুরু হয়েছে ও হচ্ছে।
ঘটনার দিনঃ
আজ ১২ মে পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতবাড়ীয়া গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের নিরীহ নিরপরাধ মানুষের উপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে গণহত্যা করে।
আক্রমণের কারণঃ
সাতবাড়ীয়া ডিগ্রী কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ফজলুল হক এবং সাতবাড়ীয়া ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম শামসুল আলম জানান, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক পাবনা-২ আসনের প্রয়াত এমপি আহমেদ তফিফ উদ্দিন মাস্টারের জন্ম ভূমি সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের তারাবাড়ীয়া গ্রামে। তাছাড়া ৬৬’র আন্দোলনেও সাতবাড়ীয়ার সর্বস্তরের জনতা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
আক্রমণের ব্যাপ্তিঃ
সে কারণে পাক হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের এ দিন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী উক্ত ইউনিয়নের কুড়িপাড়া,শ্যামনগর, নিশ্চিন্তপুর, কাচুরী, তারাবাড়ীয়া, ফকিৎপুর, সাতবাড়ীয়া, নারুহাটি, সিন্দুরপুর, হরিরামপুর, ভাটপাড়া,বর্তমানে পদ্মা নদীতে বিলীন হওয়া কন্দর্পপুর এবং গুপিনপুর সহ ১৫/২০টি গ্রামে অপারেশন চালিয়ে গণহত্যা করে।
তারা এদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা রাত পর্যন্ত ওই সকল গ্রামে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে আ,লীগ নেতা মহির উদ্দিন, ফকোর উদ্দিন, সমির সাহা, ওয়াজেদ আলী, গোপাল শেখ, অসিত সাহা, খিতিশ সাহা, বাসুদেব বিশ্বাস, চেতনা শেখ, আব্দুল কদ্দুস এবং সেকেন্দার আলীসহ নাম নাজানা প্রায় ৫/৬‘শ নারী-পুরুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করে।
এদের মধ্যে পাক হানাদার বাহিনী ও দেশীয় রাজাকাররা প্রায় ২‘শ জনের লাশ পার্শ্ববর্তী পদ্মা নদীতে ভাসিয়ে দেয়। শুধু তাইনা হানাদার বাহিনী গণহত্যা করার পাশা-পাশি গোটা ইউনিয়নে ব্যাপক লুটপাট, ধর্ষণ এবং বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ চালায়। ফলে বছর ঘুরে আজকের এই দিন হাজির হলেই বিশেষ করে ওই সকল শহীদ পরিবারের মাঝে দেখা দেয় শোকের মাতম।
স্মৃতিস্তম্ভঃ
২০১৩ সালে বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নিমার্ণ প্রকল্পের আওতায় গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে সাতবাড়ীয়া ডিগ্রী কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করেছে।