সেপ্টেম্বর 2019 - Prodipto Delwar

Unordered List

ads

Hot

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

তাবেয়ীদের নামের তালিকা পরিচিতি ও জীবন কাহিনী

৯/১৪/২০১৯ ১২:৩৮:০০ AM 1
তাবেয়ী (আরবী تابعى ) শব্দটি ইসলামী পরিভাষার ব্যবহৃত আরবী শব্দ । তাবেয়ী দ্বারা রাসুল (সঃ) এর সঙ্গী অর্থাৎ সাহাবাদের সাথে দেখা পাওয়া ঈমানদার ব্যাক্তিদের বুঝানো হয় । তাবেয়ীদের মধ্যে অনেক ইসলাম জ্ঞানী ব্যাক্তি রয়েছেন যারা ইসলাম ধর্মের প্রচার ও প্রসার ঘটিয়েছেন ।

তাবেয়ীদের নামের তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত


সংজ্ঞা[উৎস সম্পাদনা]

তাবেয়ী ঐ ব্যাক্তিকে বলা যাবে যিনি ঈমান গ্রহন অবস্থায় কোন সাহাবাকে দেখেছেন,তাঁর সাথে কথা বলেছেন বা তাঁর থেকে শিক্ষা গ্রহন করেছেন এবং ঈমান অবস্থায় মৃত্যু বরন করেছেন । তাবেয়ী হচ্ছেন- যারা নবুয়তি যুগের পরে এসেছেন রাসুল (সঃ) কে দেখেননি কিন্তু সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গ পেয়েছেন যদিও ঐ ব্যক্তি রাসুল (সঃ) যুগেই জন্ম গ্রহন করেছেন ।
ইসলামের বিভিন্ন মনিষী তাবেয়ীর সংজ্ঞা এভাবে উপস্থাপন করেছেনঃ
১। উলুমুল হাদিস এর পরিভাষায়- তাবেয়ী হচ্ছেন: যিনি সাহাবীর সাক্ষাত পেয়েছেন তিনি তাবেয়ী। বিশুদ্ধ মতানুযায়ী, এর জন্য দীর্ঘদিনের সঙ্গ শর্ত নয়। অতএব, যিনি সাহাবীর সাক্ষাত পেয়েছেন এবং ঈমানের সাথে মৃত্যুবরণ করেছেন তিনিই তাবেয়ী। তাবেয়ীর মধ্যে উত্তমতার স্তরভেদ রয়েছে।
২। হাফেয ইবনে হাজার (রহঃ) ‘নুখবাতুল ফিকার’ (৪/৭২৪) গ্রন্থে বলেন: তাবেয়ী হচ্ছেন- যিনি সাহাবীর সাক্ষাত পেয়েছেন।
৩। ইবনে কাছির (রহঃ) বলেন: খতিব আল-বাগদাদী বলেন: তাবেয়ী হচ্ছেন যিনি রাসুল (সঃ) নবুয়তের পরে জন্ম গ্রহন করেছেন এবং তাঁর সাহাবীর দেখা পেয়েছেন ।
৪। হাকেমের বক্তব্যের দাবী হচ্ছে- যিনি সাহাবীর সাক্ষাত পেয়েছেন তাকে তাবেয়ী বলা যাবে। সাহাবীর থেকে শিক্ষা লাভ না করে থাকে ।

তাবেয়ীদের মর্যাদা[উৎস সম্পাদনা]

তাবেয়ীদের সন্মান ও মর্যাদা সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস পাওয়া পাওয়া যায় । [১]
১। ইমাম বুখারী (৩৬৫১) ও ইমাম মুসলিম (২৫৩৩) হতে বর্ণিত, ইবনে মাসউদ থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “সর্বোত্তম মানুষ হচ্ছে- আমার প্রজন্ম। এরপর যারা আসবে তাঁরা । এরপর যারা আসবে তাঁরা । অতঃপর এমন কওম আসবে যাদের সাক্ষ্য হলফের পিছনে, হলফ সাক্ষ্যের পিছনে ছুটাছুটি করবে।”
২। সহিহ বুখারির ৩৩৯৯ নং হাদিসে বর্নিত রয়েছেঃ
عن أبي سعيد رضي اللّٰه عنه،عن النبيّ صلى اللّٰه عليه وسلم،قال:يأتي على الناس زمان يغزون،فيقال لهم:فيكم من صحب الرسول صلى اللّٰه عليه وسلم،فيقولون نعم،فيفتح عليهم،ثم يغزون،فيقال لهم هل فيكم من صحب من صحب الرسول صلى اللّٰه عليه وسلم؟فيقولون نعم،فيفتح لهم
হযরত আবু সাইদ (রা) থেকে বর্ণিত,রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লাম বললেন, লোকদের নিকট এমন যুগ আসবে যে,তারা যুদ্ধ করবে,তখন তাদের বলা হবে,তোমাদের মধ্যে এমন ব্যক্তিও কি আছেন,যিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লামের সাঙ্গ পেয়েছেন?তখন তারা বলবেন হ্যাঁ।তখন (সাহাবাদের বরকতের দরুন)তাদেরকে বিজয় দেয়া হবে।তারপর তারা জিহাদ করবেন,তখন তাদের বলা হবে তোমাদের মধ্যে এমন ব্যাক্তি কি আছেন,যিনি রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহী ওয়াসাল্লামের সাহাবাদের সহচর্য পেয়েছেন?তখন তারা বলবেন হ্যাঁ।তখন তাদেরকে বিজয় দিয়ে দেয়া হবে।

বিশিষ্ট তাবেয়ীগন[উৎস সম্পাদনা]

ইসলামের অন্ত্যন্ত মূল্যবান ব্যক্তিবর্গ হচ্ছেন তাবেয়ীগন । অনেক ইসলাম ধর্মের মনিষী রয়েছে এর মধ্যে । কিছু নাম উল্লেখ্যঃ [২] [৩]

  • আব্দুল্লাহ ইবন আমর (রহঃ)
  • আব্দুল্লাহ ইবনে মুহায়রিজ

তাবেয়ী প্রজন্ম[উৎস সম্পাদনা]


১। বিশুদ্ধ মতানুযায়ী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রজন্ম হচ্ছে-সাহাবায়ে কেরাম। দ্বিতীয় প্রজন্ম হচ্ছে- তাবেয়ীগণ। তৃতীয় প্রজন্ম হচ্ছে- তাবে-তাবেয়ীগণ। [ইমাম নববী রচিত সহিহ মুসলিমের ব্যাখ্যাগ্রন্থ (১৬/৮৫) থেকে সমাপ্ত]
২। হাফেয ইবনে হাজার বলেনঃ হাদিসের বাণী: “রাসুল (সঃ) প্রজন্মের যারা তাঁরা হচ্ছেন "সাহাবীগণ" । এদের পরে যারা তারা হচ্ছেন- "তাবেয়ীগণ" । এরপর তাদের পরে যারা তারা হচ্ছেন- "তাবে-তাবেয়ীগণ" । ফাতহুল বারী (৭/৬) থেকে সমাপ্ত।
৩ । সুয়ুতী বলেন: প্রজন্ম বিশেষ কোন সময়সীমাতে আবদ্ধ নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রজন্ম হচ্ছে- সাহাবায়ে কেরাম। নবুয়তের শুরু থেকে সর্বশেষ সাহাবীর মৃত্যু পর্যন্ত ১২০ বছর এই প্রজন্মের সময়কাল ।এরপর তাবেয়ী-প্রজন্মের সময়কাল ১০০ হিঃ থেকে ৭০ বছর পর্যন্ত ।এরপর আর তাবে-তাবেয়ী প্রজন্মের সময়কাল এরপর থেকে শুরু ২২০ হিঃ পর্যন্ত। মিরকাতুল মাফাতিহ’ (৯/৩৮৭৮) গ্রন্থ থেকে সমাপ্ত।

লেখকঃ
Islamic University,Bangladesh... 
লেখাটা উইকিপিডিয়াতেও পাবেন  (তাবেয়ী)

তথ্যসূত্র[উৎস সম্পাদনা]









Read More

মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

স্বাধীনতা যুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আব্দুস সামাদ - সুজানগরের কৃতী সন্তান

৯/১০/২০১৯ ০৭:০৩:০০ AM 0
আব্দুস সামাদ (১৯৩৬-১৯৯৯) মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় অন্যতম সংগঠক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন । তিনি মুজিবনগরে সরকারের প্রথম প্রতিরক্ষা সচিব ছিলেন । ১৯৭১ সালে তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসক ছিলেন ।


জন্ম ও বাল্যকালঃ

মুক্তিযুদ্ধের মহান অবদানকারী এই ব্যক্তি ১৯৩৬ সালে পাবনা শহরের পৈলানপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার রাইপুর গ্রামে তাঁর পৈতৃক নিবাস। তাঁর পিতার নাম আবদুল জব্বার আহাম্মদ । তিনি পাবনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং মাতা সেলিনা খাতুন ছিলেন গৃহিণী । চার ভাইয়ের মধ্যে আবদুস সামাদ, সিএসপি ছিলো কনিষ্ঠ। বড় তিন ভাই যথাক্রমে আবদুর রহিম (১৯২৬-১৯৯৯), ইপিসিএস ও ক্যাপ্টেন আবদুল মান্নান (১৯২৯-১৯৯৫) সেনা কর্মকর্তা এবং আবদুস সালাম (১৯৩৪-১৯৯৭) সিএসপি অফিসার ছিলেন। তাঁরা চার ভাই-ই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেছিলো ।

মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী উল্লসিত তরুণ 


শিক্ষাজীবনঃ

আবদুস সামাদ ১৯৫২ সালে পাবনা জিলা স্কুল থেকে ম্যাটিক পাস করেন। ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং ফজলে হোসেন আবেদ তাঁর সহপাঠী ছিলেন। ১৯৫৪ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে আইএসসি পাস করেন এবং ১৯৫৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।

কর্মজীবনঃ

১৯৫৯ সালে আবদুস সামাদ পাকিস্তান সেন্ট্রাল সার্ভিস (সিএসপি) এ যোগ দেন এবং গ্রেডেশনে তিনি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। কর্মজীবনে আবদুস সামাদ ১৯৬৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এসডিও এবং ১৯৬৮ সালে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ছিলেন। ১৯৬৯ সালে তিনি সিলেটের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন। স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হলে তিনি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে অবস্থান নেন ।

আব্দুস সামাদ সম্পর্কে বিশিষ্ট লেখকের নিবন্ধঃ

মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম-কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান "সা’দত হুসাইন" তাঁর এক নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, “জুলাই মাসে সিলেটের জেলা প্রশাসক জনাব আবদুস সামাদ মুজিবনগর এসে পৌঁছলেন। ফলে তিনি হলেন মুজিবনগর সরকারের সর্বজ্যেষ্ঠ সিএসপি (সেন্ট্রাল সার্ভিস অফ পাকিস্থান) জেলা প্রশাসক। তিনি ক্লান্ত,অবসান্ত ও ভঙ্গুর চেহারা নিয়ে মুজিব নগরে উপস্থিত হলেন দেখে মনে হচ্ছে অনেকদিনের অভুক্ত। আমাদের মেসেই তাঁর থাকার ব্যবস্থা করা হলো।
কয়েকদিনের মধ্যেই জনাব সামাদকে প্রতিরক্ষা সচিব পদে নিয়োগ দেয়া হলো। তাঁর প্রকৃত কাজ কি ছিল সে সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তিনি নিরবে কাজ করে যেতেন। আমার ধারণা তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথেই তাঁর কাজ সম্পন্ন করেছেন। আমি জীবনে যে ক’জন সুউচ্চ পর্যায়ের মেধাবী ব্যক্তিকে দেখেছি জনাব সামাদ নিঃসন্দেহে তাঁদের অন্যতম। সাহিত্য, সংস্কৃতি, সমাজ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস কিংবা দর্শন বিষয়ে তাঁর জ্ঞান এবং মানসিক সপ্রতিভতা যে কোনো লোককে মুগ্ধ করবে। তাঁর চালচলন ছিল অতি সাধারণ, মেজাজ ছিল ঠাণ্ডা, ব্যবহার ছিল সুমার্জিত ও পরিশীলিত। আমি জনাব সামাদকে কোনোদিন রাগতে দেখি নি, উত্তেজিত হতে দেখি নি, ঘাবড়ে যেতে দেখি নি, হতাশ বা উৎফুল্ল হতেও দেখি নি।…তিনি আমাদের সবার কথা শুনতেন, মূল্যায়ন করতেন এবং এবং যুক্তিতর্ক ও বিশ্লেষণ দিয়ে তাঁর বক্তব্য ধীরে সুস্থে সকলের বোধগম্য করে উপস্থাপন করতেন। যা আমরা সবাই উপভোগ করতাম ও প্রায়শই গ্রহণ করতাম।” (১)


স্বাধীনতাযুদ্ধে দায়িত্ব পালনঃ

১৯৭১ সালের ৯ আগস্ট তিনি মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী মন্ত্রণালয়ের প্রতিরক্ষা সচিবের দায়িত্ব গ্রহন করলেও প্রতিরক্ষা সচিবের দায়িত্ব ছাড়াও তিনি কখনও কখনও অন্য দায়িত্বও পালন করতেন। উল্লেখ্য


স্বাধীনবাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচার সম্বন্ধীয় নীতি নির্দ্ধারণী সভায় প্রতিরক্ষা সচিব জনাব আবদুস সামাদকে একই সাথে প্রেস, তথ্য, বেতার ও চলচ্চিত্রেরও অতিরিক্ত দায়িত্ব অর্পণ করেন।” (২)
এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সামাদ বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধ প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এবং শরণার্থী শিবিরে ঘুরে ঘুরে মুক্তিযোদ্ধা ও শরণার্থীদের খোঁজ নিতেন। স্বাধীনতার পর তিনি নবগঠিত বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রতিরক্ষা সচিব হিসেবে নিযুক্ত হন। এরপর তিনি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ট্যারিফ কমিশন ও বিএডিসি’র চেয়ারম্যান হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। কর্মজীবনে তিনি দেশে ও বিদেশে কয়েকটি প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করেন।

পারিবারিক জীবনঃ

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেকশন অফিসার থাকাকালে আবদুস সামাদ প্রফেসর সুলতান আহমেদ চৌধুরীর কন্যা রিজিয়া সুলতানাকে বিয়ে করেন। তাঁদের এক ছেলে- জয় সামাদ ও এক মেয়ে- শম্পা সামাদ।

মৃত্যুঃ


১৯৯৯ সালের ২৯ জানুয়ারি তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন এবং তাঁকে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আমিন।

তথ্যসূত্রঃ

১। মুক্তিযুদ্ধে সিএসপি ও ইপিসিএস অফিসারদের ভূমিকা - কাবেদুল ইসলাম (পৃষ্ঠা :৬১-৬২) ।
২। মুজিবনগর সরকারের অফিসার রবীন্দ্রনাথ ত্রিবেদীর একটি নিবন্ধ - তাং (৩ সেপ্টেম্বর '৭১)
৩। পাকিস্তানস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাবেক কাউন্সিলর প্রেস মুহাম্মদ ইকবাল হোসেনের প্রেরিত তথ্য।
Read More

রবিবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

বোনকোলা গ্রামের পরিচিতি

৯/০৮/২০১৯ ০২:৪৯:০০ AM 2
বোনকোলা পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার একটি সুনামধন্য গ্রাম ।গ্রামটি সুজানগর উপজেলার মানিকহাট ইউনিয়নে অবস্থিত ।সুবিশাল আয়তন নিয়ে অনাবিল সৌন্দর্যের গাজনার বিল ঘেঁষে এই গ্রামটি অবস্থিত ।আমার নিকট আমার গ্রামটি বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর গ্রামগুলোর একটি । চলুন জেনে নিই বোনকোলা গ্রামের আদ্যপ্রান্ত সকল বিবরণীঃ

বোনকোলা গ্রামের ইতিহাসঃ

বোনকোলা গ্রামের নামকরণের ইতিহাস তেমন কিছু জানা যায়না ।তবে শোনা যায় গ্রামটি অনেক পুরাতন । বয়োবৃদ্ধ লোকদের মুখে শোনা যায় অনেক আগে পদ্মা নদীর উত্তর পারের কোল ধরে    বন-খাগড়ায় আবৃত্ত ছিলো ।কিছু মানুষ এই বন কেটে জনবসতি শুরু হয়।এই জনবসতি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে আর এই ভাবে গ্রামটির নাম হয় “বোনকোলা” (১)

১৯৭২ সালের আগে এই গ্রামসহ আশে পাশের সকল গ্রাম বন্যার পানিতে ডুবে যেত ফলে এই অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগের শেষ ছিলো । অনুন্নত জীবনযাপন করতে হতো এদের । পদ্মা নদীর পারে"মুজিব বাঁধ" দেওয়াতে এই এলাকা বণ্যার কবল থেকে রক্ষা পায়। সাথে সাথে ফসলের উৎপাদনও ভালো হয় এবং উন্নয়নের ছোয়া লাগে এই গ্রামে। এবং ২০০১ সালের দিকে গ্রামের রাস্থা-ঘাটের উন্নয়ন ঘটে।  (২)


অবস্থানঃ


বোনকোলা গ্রামের উত্তরে ও পূর্বে গাজনার বিল,পশ্চিমে হ্মেতুপাড়া,তৈলকুন্ড,উত্তরে দাসপাড়া ও চরগাজারিয়া গ্রাম । বোনকোলা মানিকহাট ইউনিয়নের মোটামুটি মধ্য স্থানে অবস্থিত,ফলস্বরূপ আশে পাশের গ্রামের মানুষদের যাতায়াতের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ।


আয়তন ও জনসংখ্যাঃ 

আনুমানিক ৭ বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে এই গ্রামটি অবস্থিত ।মানিকহাট ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বড় গ্রাম এটা । গ্রামের জনসংখ্যা প্রায় ১০ হাজার । গ্রামে জনসংখ্যার ঘনত্ব মাঝামাঝি ধরনের ।


শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ

বোনকোলা গ্রামে শিক্ষার ছোয়া লেগেছে অনেক পূর্বেই । ১৯৬৮ সালে গ্রামে সর্বপ্রথম মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় । নাম "বোনকোলা হাই স্কুল" । গ্রামের বিজ্ঞ ব্যাক্তিরা মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক স্কুল আলাদা করে নামকরণ করে "বোনকোলা গার্লস হাই স্কুল" যা বোনকোলা হাই স্কুলের সাথেই অবস্থিত ।এরপরে  ১৯৯৮ সালে বোনকোলা হাইস্কুলে কলেজ শাখা চালু করা হয় । নামকরন করা বোনকোলা হাই স্কুল এন্ড কলেজ ।  (৩) এসব প্রতিষ্ঠানে বিজ্ঞান,বাণিজ্য ও কলা বিভাগ চালু রয়েছে ।

বোনকোলা হাই স্কুল এন্ড কলেজ




বোনকোলা বালিকা বিদ্যালয়ের ভিতরকার একটি চিত্র

মোট কথা বোনকোলা গ্রামে ১ টি কলেজ ও ২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৪ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে । সেগুলো হলঃ

কলেজঃ

১। বোনকোলা কলেজ (স্থাপিতঃ ১৯৯৮)

মাধ্যমিক বিদ্যালয়ঃ

১। বোনকোলা হাই স্কুল (স্থাপিতঃ ১৯৬৮)
২। বোনকোলা গার্লস স্কুল ( স্থাপিতঃ ১৯৮৬)

উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ফলাফল অত্যন্ত সন্তোষজনক ।










 ৪ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোঃ

১। বোনকোলা হাই স্কুল সংলগ্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় 
২। বোনকোলা ১ নং প্রাথমিক বিদ্যালয়
৩। বোনকোলা ২ নং প্রাথমিক বিদ্যালয়
৪। বোনকোলা রাঘবপুর সরকারী প্রাথমিক  বিদ্যালয় ।

প্রতিটা স্কুলের ফলাফল ভালো ও উল্লেখযোগ্য ।


বোনকোলা ১ নং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় (বর্ষাকালের মাঠ ডুবে যায়)


এছাড়াও বেসরকারী ভাবে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য দুইটি কেজি স্কুল ও ব্র্যাক স্কুল রয়েছে ।

হাট বাজারঃ

বোনকোলা গ্রামে একটি বড় হাট (সপ্তাহে ছয়দিন) ও একটি ছোট বাজার (হাজীর বাজার নামে পরিচিত) রয়েছে । এসব বাজারে কাঁচা বাজার থেকে শুরু করে সকল প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র পাওয়া যায় ।  


বোনকোলা হাটের বটতলার একটি দৃশ্য 


বোনকোলা হাটের এই বটতলা মোড় থেকে এক রাস্তা বোনকোলা গ্রামের মধ্যে,এক রাস্তা খেতুপাড়া-রাইপুরের দিকে আর এক রাস্তা তৈলকুন্ডু-মানিকহাটের দিকে চলে গেছে । এটাই বোনকোলার মূল পয়েন্ট হিসাবে পরিচিত । এই অঞ্চল বোনকোলা কলেজ পাড়া নামে পরিচিত ।














যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ


অত্র গ্রামের মধ্য দিয়ে অনেক গুলো কাঁচা-পাকা রাস্তা চলে গেছে । অধিকাংশ রাস্তা পাকা হলেও কিছু কাঁচা রাস্তা রয়েছে ।সরাসরি বোনকোলা থেকে উপজেলা শহর ও জেলা শহর পর্যন্ত সিএনজি পাওয়া যায় ।


দর্শনীয় স্থানঃ

বোনকোলা গ্রামের সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক স্থান হল গাজনার বিল । গাজনার বিল সংলগ্ন বোনকোলা জাঙ্গালে বর্ষাকালে অসংখ্য দর্শনার্থী জমায়েত হয় ।জাঙ্গাল থেকে নৌকা ভ্রমণের ব্যস্ততা পরে যায় ।


বোনকোলা জাঙ্গালে অল্প দর্শনার্থীদের একাংশ 
বর্ষাকালে এই স্থান থেকে প্রতি বছর নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয় । সেটা মানুষের জন্য আনন্দের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয় । উক্ত মেলায় আশে পাশের সকল গ্রামের নৌকা অংশগ্রহন করে ।
এছাড়াও গ্রাম ছাড়িয়ে গাজনার বিলের মাঠের মধ্যে ডুবো রাস্তা চলে গেছে তা বিশেষভাবে মনোমুগ্ধকর ।












ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানঃ

বোনকোলা গ্রামের মানুষ ধর্মভীরু ও শান্তিপ্রিয় মানুষ । গ্রামের শতকরা ৯৮ ভাগ মানুষ মুসলমান ।

এই গ্রামেঃ

*২ টি  হাফেজিয়া মাদরাসা রয়েছে
*১ টি  মহিলা কওমি মাদরাসা রয়েছে
*১০ টি মসজিদ রয়েছে । ও প্রতিটি মসজিদে বেসরকারীভাবে মক্তব চালু রয়েছে ।

হাফেজিয়া মাদরাসা গুলোঃ

১। বোনকোলা গোরস্থান সংলগ্ন হাফেজিয়া মাদরাসা
২। বোনকোলা ঈদগাহ সংলগ্ন হাফেজিয়া মাদরাসা


পেশা ও সামাজিক জীবনঃ

গ্রামে অধিকাংশ মানুষদের পেশা কৃষি কাজ । এই গ্রামে পিয়াজ,পাট ও ধানের আবাদি হয় প্রচুর পরিমাণে । পিয়াজ  উৎপাদনের জন্য বোনকোলা সারা পাবনাতে বিখ্যাত ।তবে চাকুরীজিবি, শিক্ষকতা,মাছ ধরা সহ বিভিন্ন পেশার মানুষের সমন্বয় রয়েছে আমাদের বোনকোলাতে ।

ব্যাংক ও এনজিওঃ

অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নশীল গ্রাম বোনকোলাতে ৩ টি ব্যাংক ও কিছু এনজিও প্রতিস্থান রয়েছে ।  (৪)
ব্যাংকের মধ্যে রয়েছেঃ
১। রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক,বোনকোলা শাখা
২। গ্রামীণ ব্যাংক,বোনকোলা  
৩। ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট শাখা,বোনকোলা

এবং এনজিও সংস্থা গুলো ঃ
১। আশা
২। গ্রামীণ ব্যাংক
৩। সিসিডিএ
৪। পপি ই 

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বঃ
বোনকোলা গ্রামের এই ছোট্ট এলাকাতেও কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি রয়েছে । ((৬)
১।  মৃত রওশন আলী শিকদার -সংগীত শিল্পী রাজশাহী বেতার
২। মৃত ফজলুল রহমান - সাবেক মেয়র,লন্ডন
৩। ডা. মোঃ সেকেন্দার আলী-  সাবেক অধ্যক্ষ,লিবিয়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়
৪। মৃত হাকিম উদ্দিন শেখ - অধ্যাপক,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 
৫। মৃত লোকমান হাকিম  -বিশিষ্ট কবি
৬। মোঃ হারুন-অর-রশিদ - সাবেক সচিব ও সমাজসেবক
৭। মৃত আজিজুর রহমান - বীর প্রতিক
৮। মৃত ডাঃ সফিউর রহমান - অধ্যাপক ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
৯। মৃত মোতাহার হোসেন   - সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ( ১৯৭৩-১৯৭৭)
১০। মৃত হবিবর আলী খান - সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান (১৯৮৮-১৯৯২)
১১। মৃত খোরশেদ আলম খান - সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান (১৯৯৮-২০০৩)


অনন্যঃ

এছাড়াও গ্রামে একটি মধ্য পাড়ায় বড় ঈদগাহ ও বোনকোলা কলেজ পাড়ায় তথা বোনকোলার শেষ সীমানায় একটি বৃহৎ গোরস্থান রয়েছে ।


Writer: Delwar Hossain
Bonkola College Para..

তথ্যসূত্রঃ




Read More

বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

ব্রিটিশ বিরোধী নেতা মাওলানা রইচ উদ্দিন - সুজানগর উপজেলার গর্ব

৯/০৫/২০১৯ ০৮:৩৫:০০ AM 0
আজকে গল্প বলবো সুজানগরের কৃতী সন্তান,সুজানগর উপজেলার বিখ্যাত ব্যাক্তি মাওলানা রইচ উদ্দিনকে নিয়ে ।

মাওলানা রইচ উদ্দিন   ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের অকুতোভয় বীর সৈনিক, পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সাবেক সদস্য (১৯৫৪-৫৮) ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মাওলানা রইচ উদ্দিন (১৮৯৬-১৯৬৫)-এর কথা।
বাল্যকালঃ
ব্রিটিশ-বিরোধী অকুতোভয় বীর সৈনিক মাওলানা রইচ উদ্দিন ১৮৯৬ সালে পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দি ইউনিয়নের অন্তর্গত পুকুরনিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। রমজান আলী তাঁর পিতার নাম ।
মাওলানা রইচ উদ্দিন স্থানীয় শ্যামগঞ্জ মানিককুণ্ডু  বিদ্যাপীঠে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। সাগরকান্দি জমিদারদের প্রতিষ্ঠিত জুনিয়র স্কুলে পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করার পর মুর্শিদাবাদ নবাব হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন।
শিক্ষাজীবনঃ
প্রাথ্যমিক শিক্ষা পাঠ চুকিয়ে মুর্শিদাবাদ স্কুল থেকে ১৯১৬ সালে তিনি এই স্কুল থেকে প্রথম বিভাগে এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন।এরপর  রাজশাহী কলেজ থেকে তিনি ১৯১৮ ও ১৯২০ সালে যথাক্রমে প্রথম বিভাগে আইএ ও Distincation সহ বিএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি ও আরবি সাহিত্যে এমএ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। উল্লেখ্য, ১৯২০ সালে রাজশাহী কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ মাওলানা রইচ উদ্দিনের মেধার স্বীকৃতিস্বরূপ একটি সার্টিফিকেট প্রদান করেন। যে কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি বিনা বেতনে অধ্যয়ন করার সুযোগ লাভ করেন। সুজানগর উপজেলায় মাওলানা রইচ উদ্দিনই প্রথম এমএ পাস করেন।
রাজনৈতিক জীবনঃ
সমস্ত জীবন সাধারণ জনগণের জন্য কাজ করে যাওয়া  নেতা মাওলানা রইচ উদ্দিন শিক্ষাজীবন সমাপ্ত করে গান্ধিজির নেতৃত্বে কলকাতায় কংগ্রেস পার্টিতে যোগ দেন এবং মওলানা শওকত আলী ও মওলানা মোহাম্মদ আলী ভ্রাতৃদ্বয়ের রাজনৈতিক সহপাঠী হিসেবে কাজ করেন। তৎকালে কংগ্রেসের নেতৃত্বে পাবনাসহ সমগ্র উত্তরবঙ্গে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম করেন এবং নেতৃত্ব দেন। ১৯২৪ সালে তিনি কলকাতাস্থ পাবনা সমিতির ঊর্ধ্বতন সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সাগরকান্দির জমিদারদের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে ১৯৩০ সালে তিনি তালিমনগরে একটি জুনিয়র মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। এ বছরেই তিনি মুসলিম লীগে যোগ দেন। ১৯৪৬ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে মুসলিম লীগের মনোনয়ন প্রার্থী হন। কিন্তু মনোনয়ন পান দেওয়ান লুৎফর রহমান (ভাষাসৈনিক)। তিনি দেওয়ান লুৎফর রহমানের পক্ষে জোরালোভাবে কাজ করেন। নির্বাচনে লুৎফর রহমান বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হন। ১৯৪৮-১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন।
বাংলার রাজনীতিতে মাওলানা রইচঃ
১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে গঠিত হয় ঐতিহাসিক ‘যুক্তফ্রন্ট’।
যুক্তফ্রন্টের মনোনয়ন প্রকাশ পেলে দেখা গেল, সৈয়দ ফজলে হোসেন আবদুর রব বগামিয়া মনোনয়ন পেয়েছেন সুজানগর ও সাঁথিয়ার অংশ থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি হিসেবে। আর মাওলানা রইচ উদ্দিন মনোনয়ন প্রার্থী থাকা সত্বেও বাদ পড়েছেন। মাওলানা রইচ উদ্দিন ছুটে গেলেন পাবনায়, আবদুর রব বগামিয়ার কাছে। বগামিয়াকে বুঝিয়ে নিয়ে গেলেন ঢাকায় এবং মনোনয়ন পরিবর্তন করে প্রার্থী হয়ে এলেন মাওলানা রইচ উদ্দিন। উল্লেখ্য যে, আবদুর রব বগামিয়া মাওলানা রইচ উদ্দিনকে খুবই সম্মান করতেন। তাই তিনি নিজে প্রার্থী না হয়ে মাওলানা রইচ উদ্দিনকে মনোনয়ন পাইয়ে দিলেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ ধরনের নজির খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। নির্বাচনে মাওলানা রইচ উদ্দিন নির্বাচিত হয়েছিলেন।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে মাওলানা রইচ উদ্দিনঃ
ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ ও জমিদারদের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে এদেশের প্রখ্যাত ওলিয়ে কামেল, পাবনার কুতুব হযরত শাহ মাহতাব উদ্দিন (রহঃ) নিজে ছায়ার মতো মাওলানা রইচ উদ্দিনকে সাহায্য-সহযোগিতা করতেন। জমিদারদের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে মাওলানা রইচ উদ্দিন-ই সাগরকান্দি এলাকায় সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে গরু কোরবানির প্রচলন করেন। সে সময় গরু কোরবানি নিষিদ্ধ ছিল। এমনকি কেউ যদি গরুর মাংস খেত এবং সেটা যদি জমিদার জানতে পারত, তাহলে ওই ব্যক্তিকে ৫০ টাকা জরিমানা দিতে হতো। মুসলমানরা যাতে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি সঠিকভাবে পালন করতে পারে সে ব্যাপারে তিনি আপ্রাণ চেষ্টা করে গেছেন। বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে অর্থ সাহায্য করেছেন এবং স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার অনেক গরিব মেধাবী ছাত্রদের তিনি আর্থিক সহযাগিতা ছাড়াও বইপত্র ক্রয় করে দিতেন। রইচ উদ্দিন মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে আমৃত্যু আন্দোলন করে গেছেন।
রইচ উদ্দিনের পারদর্শিতাঃ
মাওলানা রইচ উদ্দিন ছিলেন একাধারে কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, মনোবিজ্ঞানী ও ইসলামের আধ্যাত্মিক সাধক। তাঁর লেখা কোরআনের বাণী, মরুবীণা, সিন্ধু ও বিন্দু, মুর্শিদাবাদ ভ্রমণ বিলাপ- তৎকালীন সমাজের দুরবস্থা ও প্রতিকার প্রভৃতি তাঁর পাণ্ডিত্যের সাক্ষ্য বহন করে। অনলবর্ষী বক্তা হিসেবে তিনি ছিলেন সমধিক পরিচিত। বাংলা, ইংরেজি, আরবি, ফারসি ও সংস্কৃত ভাষায় বিশেষ পারদর্শী ছিলেন তিনি এবং সকল ভাষায় অনর্গল বক্তৃতা দিতে পারতেন। ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মিশুক ও সদালাপী। সাধারণ পোশাক পরিধান করতেন তিনি।
মৃত্যুঃ
পাবনা ও সুজানগরের গর্ব এই মহান সাধক ১৯৬৫ সালের ২০ ডিসেম্বর নিজ বাসগৃহে মৃত্যুবরণ করেন।
Read More

মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

সুখে থাকার মূল মন্ত্র - মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন

৯/০৩/২০১৯ ০১:৫৭:০০ AM 0
সুখ শান্তি এই পৃথিবীর সকল মানুষের একান্ত কাম্য বিষয় । এই যে আমরা সারাদিন এতো পরিশ্রম করছি,পড়াশোনা করছি  এগুলো দিন শেষে একটু ভালো থাকার জন্য,পরিবারকে ভালো রাখার জন্য ।
তাই সুখে থাকার কিছু টিপস হিসেবে এগুলো পড়ে দেখতে পারেন অবশ্যই উপকৃত হবেন ।

আমরা যদি কিছু মৌলিক বিষয় কাটিয়ে তুলতে পারি তাহলে আমরা আমাদের অশান্তির জীবন কিছুটা হলেও কাটিয়ে তুলতে পারবো ।

১। পজিটিভ ধারণা রাখুনঃ 

মানুষ সামাজিক জীব,সবার সাথে এদের উঠা-বসা । যদি সমাজের অধিকাংশ মানুষ সম্পর্কে আপনার ধারণা নেতিবাচক বা সংশয়বাদি হয় তাহলে আপনি সারাক্ষণ অস্বস্তিতে ভুগবেন,মেজাজ খিটখিটে থাকবে ।তাই মানুষের মধ্যে সবসময় ভালো গুণ গুলো খুজুন, খারাপ গুণ গুলো মানিয়ে চলুন ।
যেমনঃ এই মানুষটির সঙ্গে আমি কেন চলবো এইটা খুজুন ।আমি কেন তাঁর সাথে চলবো না এই প্রশ্ন বাদ রাখুন । সবসময় সবাইকে ভালো জানুন ও ভালো বলুন ।আপনার চোর বন্ধুটিকেও আপনি ভালো বলুন,তাঁর পজিটিভ গুণ গুলো তাকে বলে দিন,দেখবেন সে আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে পরেছে ।সে আর সবার সাথে খারাপ কিছু করলেও আপনার সাথে খারাপ কিছু করবে না । কখনো কারো প্রতি সংশয়বাদি হবেন না ।তাঁর মধ্যে কিছু পরিমান ভালো গুণ থাকলে সেই গুণ গুলো আপনি ধারণ করুন । এই পজিটিভ ধারণা আপনাকে সবসময় চিন্তামুক্ত রাখবে আপনাকে সুখী রাখবে আপনার মস্তিষ্ক ।

২। নিজেকে কর্মব্যস্ত রাখুনঃ

আমরা সবাই জানি অলস মস্তিষ্ক শয়তানের কর্মকান্ডের কারখানা । আপনি যদি অলস ভাবে সময় কাটান তাহলে সবেচেয়ে বড় ব্যপার যেটা ঘটবে সেটা হল,আপনার চিন্তা-ভাবনা কাজ-কর্ম সবকিছু অলস প্রকৃতির ও খারাপ দিকে দিক বদল করবে । ফলে আপনি ধীরে ধীরে হতাশার সাগরে ডুবে যেতে থাকবেন ।ব্যপারটা এত ধীরে ধীরে ঘটবে যে,যখন এই মানসিক অবনতি প্রক্রিয়াধীন থাকবে তখন আপনি বুঝতেই পারবেন না হতাশার সাগরে ডুবে যাচ্ছেন আপনি ।তাই সবসময় আপনি ভালো কিছু কাজ নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন, এর বিনিময়ে আপনি অল্প অল্প সফলতা পাবেন ।এটাই আপনাকে সুখী করে তুলবে ।

সুখী থাকুন মডেলে এক তরুণী 


৩। পরিতৃপ্ত থাকুনঃ

পরিতৃপ্ত থাকা অর্থাৎ নিজেই নিজের কাছে সুখী থাকা এটা সুখী থাকার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন বিষয় । মানুষের অভাব সীমাহীন ।আপনি আজকে আপনার একটা চাহিদা পূরণ করবেন,আগামীকাল আরো দুইটা প্রয়োজন আপনার সামনে ধরা দিবে ।এ দুইটা পূরণ করার সাথে সাথে আরো চারটা অভাব জন্ম নিবে আপনার মাঝে ।এভাবে চলতেই থাকবে অভাব,শেষ হবেনা কখনো । তাই আপনার যা কিছু আছে আপনি তাই নিয়ে পরিতৃপ্ত থাকুন আর নিজের সাধ্যনুযায়ী নিজেকে কর্মব্যস্ত রাখুন ।মানুষের সফলতা দেখে বিচলিত হবেন না,কারণ সফলতার নিদিষ্ট কোন সংজ্ঞা নেই । আর সফলতা মানুষকে সুখ-শান্তি দিতে পারেনা । একজন গরীব অসহায় মানুষও সুখে থাকতে পারে সে যদি পরিতৃপ্ত থাকে ।

৪। সম্পর্কসমূহ ভালো রাখুনঃ

সবসময় চেষ্টা করুন আপনার আশে-পাশের মানুষদের সাথে ভালো ব্যবহার করার ।যখন আপনি আশে পাশের মানুষদের সাথে ভালো ব্যবহার করবেন তখন সবার সাথে আপনার সুমিষ্ট সম্পর্ক তৈরি হবে এটা আপনাকে নিশ্চিন্তে রাখবে । যখন আপনার পরিবার,প্রতিবেশী বা আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সম্পর্ক খারাপ থাকবে এটা আপনার মনের মধ্যে মানসিক অশান্তি তৈরি করবে যা আপনাকে অসুখী করে তুলবে । তাই সবসময় আশে পাশের মানুষদের ভালোবাসুন তাঁদের সাথে ভালো সম্পর্ক রাখুন ।

৫। নিজেকে সুখী ভাবুনঃ

আপনি আপনার মনকে যা বুঝাবেন আপনার মন সেটাই বুঝবে । আপনি যদি মনে করেন যে আপনি অসুখী তাহলে আপনার সুখে থাকার যত উপাদানই থাকুক না কেন আপনি অসুখী অবস্থায় দিন কাটাতে থাকবেন । তাই সবসময় নিজেকে সুখী ভাবুন । কখনোই নিজে কষ্টে আছেন এটা ভাববেন না । সবসময় কষ্টটা বরন করে নিয়ে নিজেকে সুখী ভাবুন । তাহলেই আপনি প্রকৃত সুখী হতে পারবেন ।

৬। নিজেকেও কিছুটা সময় দিনঃ

সবাইকে সুখী করার পর,সবাইকে সময় দেওয়ার পর নিজেকেও কিছুটা সময় দিন ।নিজের কাছে প্রশ্ন করুন আমি কি করছি সাম্প্রতিক সময়ে ? এই সমস্ত কাজ গুলো কি আমাকে সুখী করতে ? সবকিছুর মাঝেও একাকী সময় কাটান কিছুটা,একান্ত নিজের জন্য,নিজস্ব চিন্তা ও কাজের জন্য । নিজের সাথে কথা বলুন দেখবেন ভালো লাগবে । নিজের সাথে ধ্যান করুন ।চিন্তা করুন নিজেকে নিয়ে আর নিজের কাজ নিয়ে ।

৭। ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলুনঃ

সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মীয় অনুশাসনকে সুখী থাকার জন্য উপেক্ষা করে দেখা হচ্ছে । কিন্তু আপনি উপরোক্ত সব গুলো মেনে চলেও যদি ধর্মীয় বিশ্বাসী না হন তাহলে আপনাকে সহজেই হতাশা গ্রাস করে ফেলতে পারে । কারণ ধর্মীয় নীতিমালা আপনাকে এমন কিছু বলছে,যাতে এই পৃথিবীর পাওয়া না পাওয়াই সব না । আখিরাতে চূড়ান্ত পাওয়া না পাওয়ার হিসাব হবে । তাই আপনি যদি ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলেন তাহলে আপনার নিজেকে সংবরন করা,পরিতৃপ্ত থাকা সহ আপনার মনকে শান্ত রাখবে ।দুনিয়ার না পাওয়া আপনাকে ব্যথিত করবে না ।এটাই আপনার সুখী থাকার সবচেয়ে বড় পাথেয় হিসাবে কাজ করবে । তাই সুখী থাকতে অবশ্যই ধর্মীয় দিক নির্দেশনা মেনে চলুন ।




Read More

Post Top Ad

Your Ad Spot